বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও আমাদের এগিয়ে চলা



প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ
বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও আমাদের এগিয়ে চলা

বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও আমাদের এগিয়ে চলা

  • Font increase
  • Font Decrease

 

২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০১৭’ জাতীয় সংসদে পাস হয়। এরপর ২০১৮ সালে নবগঠিত বিভাগ ময়মনসিংহ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন। একই সময়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ বশেফমুবিপ্রবির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে আমাকে নিয়োগ দেন।

এরপর স্বল্প লোকবল নিয়েই ‘শূন্যে’ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আকৃতি দেয়ার কাজ শুরু হয়। এতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন ইউজিসিসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর-বিভাগের কর্মকর্তারা। ভবিষ্যতে মেলান্দহের সবুজ-শ্যামল প্রাকৃতিক পরিবেশে বশেফমুবিপ্রবির একটি আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন বলে আশা করি।

২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাকার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নিই। এরপর থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে পাঠদান চলে জেলা শহরের দেওয়ানপাড়ার বঙ্গবন্ধু আইডিয়াল কলেজের একটি ভাড়া ভবনে। তবে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে মেলান্দহে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হই আমরা। বর্তমানে সেখানে সীমিত সম্পদের মধ্যেও সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সেখানকার শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের ব্যবস্থা করা হয়।

স্থাপন করা হয় আধুনিক সুবিধাসহ ল্যাব। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা যাতে ‘গ্লোবাল ভিলেজে’ কানেক্ট হতে পারেন সেজন্য উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে। লাইব্রেরি একটা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্তম্ভ। তা বিবেচনায় নিয়ে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়েছে; যেখানে রেফারেন্স বই ছাড়াও দেশি-বিদেশি জার্নালসহ বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পারেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের শিক্ষণীয় বিভিন্ন প্লাটফর্মে যুক্ত করতে বিতর্ক ক্লাব, রোবটিক্স ক্লাব, কম্পিউটার ক্লাব গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি নিয়মিত খেলাধুলারও আয়োজন করা হয়।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ব্যাচ অধ্যয়ন করছে। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়াধীন। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) থাবায় থমকে যায় পুরো শিক্ষাকার্যক্রম। তবে এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমরা ছয়টি বিভাগের প্রতিটিতেই অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করি। সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরপরই শিক্ষার্থীদের আটকে যাওয়া পরীক্ষাগুলো নেয়া হয়। এখন পুরোদমে ক্লাস চলছে।

এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়। পাশাপাশি গরিব অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় বৃত্তি। এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ প্রথম ব্যাচে চারটি অনুষদের অধীনে চারটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এগুলো হচ্ছে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, সমাজকর্ম, গণিত ও ব্যবস্থাপনা। আর দ্বিতীয় বছরে যুক্ত করা হয়েছে নতুন বিভাগ ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। বর্তমানে ফিশারিজসহ ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, জীব ও কৃষিবিজ্ঞান এবং সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ছয়টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী, মানসম্মত শিক্ষাদান ও বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে উচ্চতর ডিগ্রিধারী ও মেধাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও জামালপুর-৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজম, এমপি। এখনও সার্বিকভাবে নানা সহযোগিতা করে চলেছেন জনমানুষের এ নেতা। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিবছরই বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন উদযাপন ছাড়াও জাতীয় দিবসসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন ও পালন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নানা জনকল্যাণমূলক কাজেও অংশ নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। করোনাকালে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ সুরক্ষাসামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দেয়া হয়েছে।

এদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বশেফমুবিপ্রবির পক্ষ থেকেও নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। তবে বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে এসব অনুষ্ঠানমালা সীমিত আকারে উদযাপন করা হচ্ছে। ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে’ নবীন এ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপন করা হয়েছে। এ কর্নারে আমাদের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে।

এছাড়া ‘অবিনাশী জনক তুমি’ শীর্ষক একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ দেশবরেণ্য লেখক ও গবেষকদের মূল্যবান লেখা স্থান পেয়েছে।

নতুন বিশ্ববিদ্যালয় মানেই চ্যালেঞ্জ, এক নতুন অভিজ্ঞতা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের প্রেক্ষিতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজকে বশেফমুবিপ্রবি-তে আত্তীকরণ করা হয়। জননেতা আলহাজ মির্জা আজম, এমপি কর্তৃক ২০০০ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করা হতো।

শিক্ষার্থী ও স্থানীয় মানুষের দাবি, এ কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হোক, যা নিয়ে অনেক আগে থেকেই আলোচনা চলে আসছিল। কিন্তু ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১৭’-তে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ফলে এ নিয়ে একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়।

এক পর্যায়ে আমি যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সংসদ সদস্য আলহাজ মির্জা আজম এ বিষয়ে সহযোগিতা করেন। পরে মন্ত্রণালয় এ কলেজটির বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায়-এ সংক্রান্ত করণীয় ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করে দেয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি এবং মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকে। কমিটি কয়েকবার সভা এবং সরেজমিনে পরিদর্শন করে কলেজটি আত্তীকরণের সুপারিশ করে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন ফিশারিজ কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন পদে আত্তীকরণ করা হয়। একই সঙ্গে তিনটি শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে। পাশাপাশি কলেজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখানে ৫০ কক্ষবিশিষ্ট একটি অ্যাকাডেমিক ভবন, দুটি হল, প্রশাসনিক ভবনসহ স্থাপনা নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। রয়েছে প্রশস্ত খেলার মাঠ।

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের একটি ফ্রেমওয়ার্ক করে দিয়েছেন। তা হচ্ছে ভিশন ২০২১, ২০৩০, ২০৪১ এবং শতবর্ষী ডেল্টা প্ল্যান। এসব ভিশন বাস্তবায়ন করতে পারলেই বাংলাদেশ একটি উন্নত ও আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পাবে। এক্ষেত্রে আমাদের যে বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করতে হবে।

এ বিষয়টি মাথায় রেখেই বশেফমুবিপ্রবির শিক্ষা-কার্যক্রমকে ঢেলে সাজানোর মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। কেননা একাডেমিক গবেষণাকে সমৃদ্ধ করার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়াও মহাকাশ বিষয়ে গবেষণা, পরিবেশ-প্রতিবেশ বিষয়ে পঠন-পাঠন ও ব্যবস্থাপনার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। থাকছে দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সহযোগিতামূলক সমঝোতার বিষয়টিও।

আমরা এখন রোবটিক্স, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং বা অদৃশ্য প্রযুক্তির কথা বলছি। এসব বিষয় মাথায় নিয়ে বশেফমুবিপ্রবি ভবিষ্যতে রোবটিক্স ও মেকাট্রনিক্সের মতো বিভাগ চালু করবে। আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন বশেফমুবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে নেতৃত্ব দেবে। সমৃদ্ধ করবে দেশের ভবিষ্যৎ, উজ্জ্বল করবে বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের মুখ। সীমিত সম্পদের মধ্যে তাদের সেভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

গবেষণা ছাড়া নতুন জ্ঞান সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। গবেষণার কাজটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা একাডেমিক আদলে প্রচলিত। এ জ্ঞান আহরণের কাজটি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে ভবিষ্যতে সমানতালে চলে সেজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেল (আইকিউএসি) প্রতিষ্ঠার কার্যক্রমও চলছে।

গবেষণাগারের উন্নয়নের কাজটি খুবই ব্যয়বহুল। এ জন্য যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, সেগুলোর মূল্য কোটি কোটি টাকা। তাই এগুলো সংগ্রহ ও স্থাপন কীভাবে সম্ভব হবে- সে উপায় নিয়ে এরই মধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্ফুটিত হওয়ার জন্য প্রকাশনা প্রয়োজন। প্রতিটি অনুষদে জার্নাল প্রকাশ করা হবে। প্রকাশনার মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক চর্চার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে এমন গবেষণা এবং আর্টিকেলের দিকেও নজর দেয়া হবে। এজন্য জনসংযোগ, প্রকাশনা ও তথ্য অধিকার দপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

মুক্তবুদ্ধির চর্চা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ, প্রগতিশীল চিন্তাচেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কেন্দ্র হিসেবে আমরা বাঙালির স্বপ্নজয়ের সারথি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছার নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গড়ে তুলতে চাই। সেভাবেই এগিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। এভাবে দিনে দিনে বশেফমুবিপ্রবির একটা নিজস্ব সংস্কৃতি সৃষ্টি হবে।

সবচেয়ে বড় কথা, এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণের পথে ধাবিত হচ্ছে। আরও অধিকতর মানসম্মত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য যেসব শর্তের প্রয়োজন, আমরা শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং শিক্ষার্থী- সবাই মিলে তা পূরণে সচেষ্ট রয়েছি। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণ, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ-দপ্তর আমাদের যথেষ্ট সাহায্য ও সহযোগিতা করছে।

বশেফমুবিপ্রবি আইনটি যেহেতু ২৮ নভেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ হয়, তাই ওই দিনটিই ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’’ হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ সোনালি দিনটি হলো বয়সে নবীন বশেফমুবিপ্রবির অর্জনকে আরও বেগবান, সফলতার পথে বাধা দূরীকরণ ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা পুনর্নির্ধারণ করে সামনে এগিয়ে চলার প্রত্যয় গ্রহণের দিন। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তা, অভিভাবকবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

লেখক: উপাচার্য, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

   

ঢাবিতে বিবিএ পড়াকালেই সিএ ভর্তির সুযোগ



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিবিএ পড়াকালেই ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস এ ভর্তির সুযোগ পাবে। এ ছাড়াও, সিএ পড়ার ক্ষেত্রে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩টি কোর্স মওকুফ করা হবে।

রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশে সিএ শিক্ষা ও গবেষণার প্রসার এবং এবিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ এবং দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং আইসিএবি'র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিন এফসিএ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, এ সমঝোতা স্মারকের আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসব সুবিধা পাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. হাসিনা শেখ, আইসিএবি'র সিইও শুভাশিস বোস এফসিএ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট এমবিএম লুৎফুল হাদী এফসিএ, ভাইস- প্রেসিডেন্ট মারিয়া হাওলাদার এফসিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের বিবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

;

উপাচার্য-শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা



অনন মজুমদার, কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি

উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি

  • Font increase
  • Font Decrease

উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির মধ্যকার দ্বন্দ্বে ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। গত ২৯ এপ্রিলে শিক্ষক সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ৩০ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত স্থগিত হয়েছে সাতটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রস্তাবিত রুটিন প্রকাশ এবং পাঁচটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার পর থেকে অর্থনীতি বিভাগ, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং মার্কেটিং বিভাগের আটটি পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। যে সাতটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার লক্ষে রুটিন হাতে এসেছিল, সেগুলোও ইতোমধ্যেই শুরু হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে অনির্দিষ্টকালের ক্লাস-পরীক্ষা ও হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলেই থেকে যায়। কেউ কেউ আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া বাসে করে ফিরে যান বাড়ি। দফায় দফায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য - শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। তারা চান, দ্রুত সময়ের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরে আসুক।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহীদ হোসেন সানি বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে আমাদের শিক্ষা জীবন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার উপর শিক্ষকদের ক্লাস পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্ত আর এরপর প্রশাসনের অনির্দিষ্টকালের বন্ধ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। ঈদের পর আমাদের স্নাতকোত্তর ১ম সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের ইনকোর্সই শেষ হয়নি। কবে নাগাদ সবকিছু স্বাভাবিক হবে, এসবের কিছুই জানি না। আমরা খুবই হতাশ। শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা সাত হাজার শিক্ষার্থী কেন ভুক্তভোগী হবো?'

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এমন ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কুবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের দিনই। ঐদিন বিকালে উপাচার্যকে ঘেরাও করে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এছাড়া উপাচার্যকে ‘নব্য আলী জিন্নাহ’ বলেন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান৷ ৬ মার্চ উপাচার্যকে সবার সামনে পদত্যাগ করতে বলেন ও ‘ডাস্টবিন’ বলেও সম্বোধন করেন।

গত ১৩ মার্চ শিক্ষক সমিতি সাত দফা দাবি জানিয়ে কর্মসূচি শুরু করে। এরপর ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়ার পর ২৫ এপ্রিল উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়। ২৮ এপ্রিল দুপুরে উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের সময় উপাচার্য, শিক্ষক সমিতি ও শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যে ত্রিমুখী ধাক্কাধাক্কির পর শিক্ষক সমিতি তাদের সাত দফা দাবি থেকে সরে এসে উপাচার্য ও ট্রেজারারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর ২৯ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরেরদিনই সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

২৮ এপ্রিলের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে কুবি শিক্ষক সমিতি ও প্রশাসন৷ শিক্ষক সমিতি উপাচার্য, ট্রেজারারসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে এবং প্রশাসন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ জানায়।

এদিকে কুবি শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন ১৯ জন শিক্ষক। তবে বর্তমান এই অচলাবস্থা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি উপাচার্য কিংবা শিক্ষক সমিতিকে। বরং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছে কুবি শিক্ষক সমিতি। ২৪ এপ্রিল ৯২তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং সিন্ডিকেট থেকে চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিদ্ধান্ত চারটি হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি অবিহিত করে দিক নির্দেশনা চাইবে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য দফতরে হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়, আগামী ১৬ মে অধ্যাপক গ্রেড-১ ও অধ্যাপক গ্রেড-২ পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য সভা আহ্বান করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. সাদেকা হালিমকে শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাথে আলোচনা করে দাবিসমূহ নিষ্পত্তির জন্য দায়িত্ব প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে সিন্ডিকেটের চার সিদ্ধান্তকে উপাচার্যের 'সমস্যা সমাধানের দৃশ্যমান উদ্যোগ নয়' দাবি করে শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং তারা তাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানায়।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের উপর যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিলো তার প্রতিবাদে আমরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু উপাচার্য সে সমস্যার সমাধান না করে যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন আমরা শিক্ষক সমিতি সেটার সাথে একমত নই। আমরা চাই দ্রুত ভিসির অপসারণ হোক এবং এই সমস্যার সমাধান হোক। আমরা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হোক চাই না। পাশাপাশি, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে ক্লাস পরীক্ষা দিতে পারুক।’

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করার আগেই ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আসছিল শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বিবেচনায় সিন্ডিকেটের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়- ক্যাম্পাস ও হল বন্ধের। আশা করছি খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।’

;

রাবিতে শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দিলো ছাত্রলীগ



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হল থেকে এক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

শনিবার (১৮ মে) দিনগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে রোববার (১৯ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামে ফেসবুকের একটি গ্রুপে ঘটনাটি বিবরণ জানিয়ে পোস্ট করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. কুদ্দুস আলী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে, অভিযুক্তরা হলেন- বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. ফজলে রাব্বি ও তার অন্তত ৮/১০ জন অনুসারী। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী।

ফেসবুক পোস্টে ভুক্তভোগী কুদ্দুস আলী উল্লেখ করেন, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একজন অনাবাসিক ছাত্র। বিভাগের বড় ভাইয়ের নামে বরাদ্দ করা ৪০২ নম্বর কক্ষে তিনি অবস্থান করছিলেন।

তিনি আবাসিক হওয়ার জন্য হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেন। প্রাধ্যক্ষ আবেদন গ্রহণ করে তাকে ওই সিটে থাকতে বলেন। আগামী মাসে বিভাগের ওই বড় ভাই ক্যাম্পাসে এলে তার সিট বাতিল করলে তিনি ওই সিটে স্থলাভিষিক্ত হবেন।

এরই মধ্যে শনিবার দিনগত রাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী এসে তাকে জোর করে সিট থেকে নামিয়ে দিয়ে অন্য একজনকে উঠিয়ে দেন।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী কুদ্দুস আলী বলেন, আমি ফেসবুক পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছি। বিভাগের শিক্ষকেরা এই ঘটনা নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, এই ব্যাপারে দ্রুতই সমাধান করা হবে।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ফজলে রাব্বি বলেন, কুদ্দুস আলী যে সিটে উঠতে চেয়েছিল, সেই সিটে সে-সহ আরো একজন থাকতো। তারা আমার কাছে সমাধান চাইতে এলে আমি তাদের বলি, এ ব্যাপারে হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের এই ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপের অধিকার নেই। এরপর তারা দুইজনই চলে যায়।

বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে রাব্বি বলেন, এর সঙ্গে ছাত্রলীগ বা আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শায়খুল ইসলাম মামুন জিয়াদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে এ বিষয়ে কিছু বলবেন না জানিয়ে বলেন, আমি এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে তারপর কথা বলবো। আর ফোনে আমি কোনো কথা বলবো না। দেখা করার জন্য সময় চাইলে তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, আমি এই বিষয়ে অবগত নই। দ্রুত এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা হবে।

;

‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন' পাচ্ছেন জাবির ২ অধ্যাপক



জাবি করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়ভাবে উৎসাহিত করার লক্ষে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন' -এর জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ ও অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান৷

গত ১৩ মে (সোমবার) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন থেকে জাবির দুই অধ্যাপকের মনোনয়ন প্রাপ্তির তথ্য জানা যায়৷ এর মধ্যে বন্যপ্রাণী বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা ক্যাটাগরিতে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২৩’ এর জন্য প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজকে এবং 'বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২৪’ এর জন্য একই ক্যাটাগরিতে অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়৷

রোববার (১৯ মে) এক অভিনন্দন বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২৩’ এর জন্য ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ ও ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২৪’ এর জন্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান মনোনীত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনন্দিত। এ পদক পরিবেশ বিষয়ে তাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনে নিরলস পরিশ্রমের স্বীকৃতি। এতে বিশ্ববিদ্যালয় সুনাম ও গৌরব বৃদ্ধি পেয়েছে।

উপাচার্য তার অভিনন্দন বার্তায় ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজ ও অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসানের অব্যাহত সাফল্য কামনা করেন৷

উল্লেখ্য, সুন্দরবনের বাঘ ও প্রাণ প্রকৃতি গবেষণার মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালে ড. মোহাম্মদ আবদুল আজিজের গবেষণার সূত্রপাত। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা নির্ণয়সহ বাঘের জিনভিত্তিক নানা রহস্য উন্মোচন ছিল তার গবেষণার বিষয়। গবেষণার জন্য ২০১৮ সালে ডারেল ট্রাস্ট ফর কনজারভেশন বায়োলজি পুরস্কার পান। সুন্দরবনের বাঘের ওপর তার প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে। ২০১৯ সালে জাতীয় বাঘ শুমারির তথ্য বিশ্লেষণে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

ড. কামরুল হাসান একজন নিবেদিতপ্রাণ বন্যপ্রাণী গবেষক ও শিক্ষক। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত তার শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা সাময়িকীতে (Journal) প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের বন ও বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত ৭টি বইয়ের লেখক/ সহলেখক৷ বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী তালিকায় ১৪টি প্রজাতি নতুন (New record) হিসেবে যোগ করেছেন৷

প্রসঙ্গত, ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ এর প্রতিটি শ্রেণিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ২ ভরি ওজনের স্বর্ণের বাজারমূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ ও ৫০ হাজার টাকার অ্যাকাউন্ট পে-ই চেক এবং সনদপত্র বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জুনে অনুষ্ঠাতব্য বৃক্ষমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া হবে।

;